কোরাল সুরক্ষায় সেন্টমার্টিনে সেভ আওয়ার সি’র আন্ডার ওয়াটার ক্লিনআপ কর্মসূচী

underwater clean-up at Saint Martin

সেন্টমার্টিনের কোরাল সুরক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেভ আওয়ার সি’র উদ্যোগে আন্ডারওয়াটার ক্লিনআপ কর্মসূচী পালন করা হয়।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষায় কোরালের ওপর নানা ধরনের প্লাস্টিক মোড়কজাত খাবার, ক্যান ও প্লাস্টিকের বোতলসহ বিভিন্ন অপচনশীল দ্রব্য অপসারনের জন্য দিনব্যাপী কাজ করেছে সামূদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষারী সংগঠন সেভ আওয়ার সি।

সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপের কোরাল সুরক্ষায় ৩ মার্চ শুক্রবার দিনব্যাপী আন্ডার ওয়াটার ক্লিন আপ কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে বিভিন্ন অপচনশীল ময়লা আবর্জনা অপসারন করে।

সেভ আওয়ার সি’র স্বেচ্ছাসেবী ডুবুরীরা প্রায় ৫০ কেজি প্লাস্টিক আবর্জনা কোরালের ওপর থেকে অপসারণ করে। এ কাজে অংশ নেয় মো: আকতার হোসেন, মো আমানুল হক, মো আবু নাছের, মো. তৌফিক আজিম,মুহাম্মাদ আব্দুল হামিদ, মো আবদুল ওয়াদুদ এবং সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক।

পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী শেষে এই সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল জানায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে কোরাল। কিন্তু ২০১৬ সালের আমাদের একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রায় ৬৭ শতাংশ কোরাল ধ্বংস হয়েছে। এ সময়ের পরে এই দ্বীপে হোটেল, মোটেল আরো দ্বিগুন হয়েছে। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। সব আবর্জনাই সৈকতে আসে এবং তা পানির নিচে কোরালের ওপর পড়ে থাকছে। এ কারনে কোরাল প্রায় শেষ হবার পথে। এখনই যদি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নেয়া যায় এ দ্বীপের কোরাল আর অবশিষ্ট থাকবে না। চরম হুমকীল মুখ পড়বে এ দ্বীপের জীববৈচিত্র।

তিনি আরো বলেন, প্রতি বছরই সেভ আওয়ার সি আন্ডার ওয়াটার ক্লিনআপ কর্মসূচী করে আসছে জনগনের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু প্রশাসনের সঠিক ভূমিকা না থাকায় কাঙ্খিত কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সরকার পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা-ইসিএ ঘোষণা করেছিল। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল যে, প্রতিদিন যদি পর্যটকদের সংখ্যা সীমিত করে ১০০০ বা ১২০০ জনের মধ্যে রাখা যায়, তাহলেও কিছুটা ভারসাম্য রাখা সম্ভব হবে। কিন্তু মৌসুমে ১০ হাজারেরও বেশি পর্যটক আসছে। ইসিএ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করেই গত বছর এমপিএ (মেরিন প্রোটেক্টেট এরিয়া) ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ বছরও নতুন এ ঘোষণার কোনো বাস্তবায়নে নেই।

এ দ্বীপের কোরাল বাঁচাতে হলে প্লাস্টিক প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা জরুরি। সেন্টমার্টিন ও ছেড়াদিয়ার পানির নিচে যে প্লাষ্টিক ও অন্যান্য ময়লা রয়েছে তা নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্কা বা কড়িজাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৫ প্রজাতির ডলফিন, ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণী, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২ প্রজাতির বাদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল। এসব প্রাণীর অনেকগুলোই এখন বিলুপ্ত বা বিলুপ্তির পথে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এ জীববৈচিত্র্য।

underwater clean-up at Saint Martin

সেন্টমার্টিনের কোরাল সুরক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেভ আওয়ার সি’র উদ্যোগে আন্ডারওয়াটার ক্লিনআপ কর্মসূচী পালন করা হয়।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , , , ,

সব সংবাদ

For add

oceantimesbd.com