থামছেই না সুন্দরবনের ভূমিক্ষয়, পাঁচ দশকে বিলিন ১২৯ বর্গ কিলোমিটার

ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকাগত পাঁচ দশকে (১৯৭০-২০২০) সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের প্রায় ১২৯ বর্গ কিলোমিটার ক্ষয়ে গিয়েছে। জঙ্গলে ঢাকা দ্বীপ এলাকাগুলি এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৮০ বর্গ কিলোমিটার ছোট হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় পরিবেশবিদেরা। বসতি দ্বীপগুলির প্রায় ৪৯ বর্গ কিলোমিটার ক্ষয় হয়েছে বলেও জানাচ্ছেন তারা।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় বাংলা গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নদীর চরে বেআইনি নির্মাণ ও ম্যানগ্রোভ নিধনের কারণে এই পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে। এতে সুন্দরবন এলাকায় উপকূলের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। বিপন্ন হচ্ছে বাদাবন।
এমন পরিস্থিতিতে উপকূল রক্ষায় প্রশাসনের তেমন নজর নেই এবং সুন্দরবনে ‘কোস্টাল ম্যানেজমেন্ট’-এর নিয়মকানুনও মানা হচ্ছে না বলেও তুলে ধরা হয় পত্রিকাটির প্রতিবেদনে।
আনন্দবাজার জানায়, সুন্দরবনে গঙ্গাসাগর, ঘোড়ামারা, মৌসুনি, নামখানা, জি প্লটের মতো কিছু জনবসতিপূর্ণ দ্বীপ এলাকা রয়েছে।  ধনচি, ডালহৌসি, বুলচেরি, বঙ্গদুনি, জম্বুদ্বীপের মতো জঙ্গলে ঢাকা দ্বীপও এলাকা রয়েছে। গত পাঁচ দশকে এসব দ্বিপের প্রায় ১২৯ বর্গ কিলোমিটার ক্ষয় হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্ষয়ে যাওয়া পলি জোয়ারের টানে ভেসে এসে নদীর খাতে জমে প্রায় ৯০ বর্গ কিলোমিটার নতুন ভূমিও জেগে উঠছে। আবার সাগরদ্বীপ সংলগ্ন লোহাচরা, বেডফোর্ড ও ল্যাসদ্বীপ তলিয়ে গিয়েছে। ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে ঘোড়ামারা দ্বীপ। ঘোড়ামারার কাছেই আবার হলদি নদীর মোহনায় জেগে উঠেছে নয়াচর নামে এক নতুন দ্বীপ।
নাম প্রকাশ না করে জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়, গত কয়েক বছর উপকূল এলাকায় ভূমিক্ষয় রক্ষা করার জন্য মাটি, ইট, সিমেন্ট ও জাল দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু চেষ্টা সফল হয়নি। আইআইটি চেন্নাইয়ের বিশেষজ্ঞেরা সাগরদ্বীপকে রক্ষা করার জন্য জোয়ারের নিম্নসীমা থেকে ২০০ মিটার দক্ষিণে একটি প্রাচীর নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের সহযোগিতা না মেলায় সেই কাজ আটকে আছে।
স্থানীয় পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “উপকূল এলাকায় কোস্টাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ম মানা হচ্ছে না। কলকাতা হাই কোর্ট এবং ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ রাজ্য সরকার পালন করছে না। দিঘা, সুন্দরবন লুন্ঠন হছে। এখানকার জীববৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে। ভূমিক্ষয় রোধ করা যাচ্ছে না। পরিবেশ দফতর, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং বায়ো ডাইভার্সিটি বোর্ডের কোনও হেলদোল নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফা লাভ হচ্ছে।”

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , ,

oceantimesbd.com