জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি কপ২৮ সম্মেলন

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়া জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৮) গতকাল মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বহুল প্রতিক্ষিত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে ফিরে আসা ইস্যুতে উন্নত বিশ্ব ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো একমতে পৌঁছাতে না পারায় যথাসময়ে শেষ হয়নি আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) প্রায় সারা রাতই জ্বালানি ইস্যুতে আলোচনা চলছে সম্মেলনের মূল সেশন অংশে। জানা গেছে, এই বিষয়ে উভয় পক্ষকে একমত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কপ২৮ সভাপতি সুলতান আল-জাবের। যদিও কপ২৮ সভাপতি নিজেই বিশ্বব্যাপী জীবাশ্ম জ্বালানির অন্যতম সরবরাহকারী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় তেল কোম্পানি অ্যাডনকের প্রধান নির্বাহী হওয়ায় তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির বিপক্ষে কতটুকু অবস্থান নিবেন শুরু থেকেই সেটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, গতরাতের আলোচনার আলোকে নতুন আরেকটি খসড়া প্রস্তুতের কাজ চলছে। সেটি প্রকাশের পরই চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও কপ২৮ সম্মেলনের নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছে সোমবার সন্ধ্যায়ই। সাধারণত কপ সম্মেলনে যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে গেলে অবশ্যই সেই চুক্তির বিষয়ে অংশগ্রহনকারী সব দেশ একমত হতে হয়। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাড়তি সময় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন কপ সভাপতি।

এর আগে গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) জীবাশ্ম জ্বালানি সম্পর্কিত খসড়া চুক্তিকে দুর্বল আখ্যা দিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। সম্মেলনের মূল ফটকে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা জলবায়ু অধিকারকর্মীরা। কারণ আগের খসড়া প্রস্তাবনায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে লিখা থাকলেও সোমবারের সর্বশেষ প্রস্তুতকৃত খসড়ায় সে কথা রাখা হয়নি।

উল্লেখ্য যে, জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ বিশ্বব্যাপী চলমান জলবায়ু সংকটের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানিকে দায়ী করে আসছেন। তাই দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ফিরে আসতে বহু আগেই আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘ প্রধান। কিন্তু সম্প্রতি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার কিছুটা বাড়লেও এখনও বিশ্বের জ্বালানির প্রায় ৮০ শতাংশই আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ফিরে আসতে হলে অবশ্যই যেসব দেশ দীর্ঘদিন ধরে এই জ্বালানি উৎপাদন এবং ব্যবহার করে আসছে তাদেরেই প্রথম এটি বাদ দিতে সম্মত হতে হবে। যদিও বরাবরের মতো এবারও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের চরম বিরোধিতা করেছে জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , ,

oceantimesbd.com