ওশানটাইমস ডেস্ক : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১৬:১৯:৫৫
পটুয়াখালীতে দিন দিন বাড়ছে লবণাক্ত জমির পরিমাণ। শুষ্ক মৌসুমে জেলার মোট আবাদি জমির ২৭.৫ শতাংশতেই কোনো ফসলই ফলানো সম্ভব হচ্ছে না। বিগত বছরের তুলনায় এবার অনেক আগেই জমিতে দেখা দিয়েছে লবণাক্ততা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে আগামীতে উপকূলীয় এলাকার কৃষি হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা কৃষি বিজ্ঞানীদের।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনিস্টিটিউটের তথ্যমতে, পটুয়াখালী জেলার মোট আবাদি জমির পরিমাণ তিন লাখ সাত হাজার ৮৭৫ হেক্টর। এরমধ্যে লবণাক্ত জমির পরিমাণ এক লাখ ৫৫ হাজার ১৮০ হেক্টর। যা মোট জমির ৫০.৪ শতাংশ। এরমধ্যে ৪২ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে কৃষক কিছু কিছু ফসল চাষাবাদ করলেও তারা লাভবান হচ্ছেন না। আর ১৫ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে কোনো ফসলই চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রতিবছর মার্চ থেকে এপ্রিলে লবণাক্ত জমির উপরিভাগে লবণের সাদা আস্তরণ পড়তে দেখা যায়। তবে এবার ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই লবণের আস্তরণ পড়তে শুরু করেছে। যা কৃষকের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
গলাচিপা এবং কলাপাড়া উপজেলায় এ লবণাক্ততার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গলাচিপা উপজেলার ১১ হাজার ৬২০ হেক্টর এবং কলাপাড়া উপজেলার চার হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে কোনো ফসলই ফলানো সম্ভব হচ্ছে না।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন নীলগঞ্জ। সম্প্রতি ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক উঁচু জমিতেও লবণের সাদা আস্তরণ পড়েছে। ফলে অন্যান্য ফসলতো দূরের কথা, এসব জমিতে এখন ঘাসও মরে যাচ্ছে। কৃষকরা সবজি চাষের জন্য উঁচু করে যে বেড তৈরি করেছেন তা খালি পড়ে আছে।
ওই এলাকার কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ‘চারপাশে যে নদী আছে তাতে এখন লবণ পানি। বর্ষা মৌসুমে যে পানি সংরক্ষণ করে রাখি তা দিয়েই চাষাবদ করতে হয়। কিন্তু এখন লবণের মাত্রা অনেক বেশি হওয়ায় হাতেগোনা কিছু ফসল ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না।’
গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কৃষক সোবহান গাজী বলেন, ‘আগে আমন ধান ওঠার পর একটা ফসল দিতে পারতাম। এখন লবণের কারণে জমিতে কিছু লাগাইলে গাছ ওঠতে ওঠতেই তা পুইড়া যায়। তাই এখন আর আমন ধান ছাড়া জমিতে কিছু দেই না (চাষাবাদ করি না)। ফাও খাডনি কইরা কী লাভ?’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকার জমিতে লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদেরও ভাবিয়ে তুলছে।
তিনি বলেন, ‘কৃষকদের লবণসহিষ্ণু বিভিন্ন জাতের ফসল চাষাবাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মালচিং পদ্বতিতে চাষাবাদ এবং আমন ধান কাটার পর জমিতে খড়কুটা বিছিয়ে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে জমিতে রস থাকবে এবং উপরিভাগে লবণের আস্তরণ পড়বে না।’
সূত্র: জাগো নিউজ২৪.কম
সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।
Tags: উপকূলীয় এলাকা, পটুয়াখালি, লবনাক্ততা
For add