উপকূলের লবণাক্ত জমিতে রিলে পদ্ধতিতে গম উৎপাদন


লবণাক্ত এবং সেচযোগ্য পানির অভাবে বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চেলের ৪ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি শুষ্ক মৌসুমে পতিত থাকছে। উপকূলের এই পতিত জমিতে ফসল ফলানোর লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া সরকারের আর্থিক সহায়তায় অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ২০১৭ সাল থেকে ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগীর তত্ত্বাবধানে গবেষণা চলছে।

ইউনিভার্সিটি অব ওয়ের্স্টান অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি প্রজেক্ট লিডার ড. নিয়োগী বিনা চাষে গম উৎপাদন পদ্ধতি বর্ণনা করে জানান, আমন ধানের জমিতে ধান কাটার ২০-২৫ দিন আগে জমি ভেজা থাকা অবস্থায় মধ্য নভেম্বরে গমের বীজ ছিটিয়ে দেয়া হয়েছিল। এই সময়ে জমির লবণাক্ততাও অনেক কম থাকে। এতে উপযুক্ত তাপমাত্রায় এবং অনেক কম লবণাক্ততায় গম ফসল ভালোভাবে বেড়ে ওঠে এবং ভালো ফলন দিতে সক্ষম হয়।

তিনি জানান, গম বীজ বোনার ২০-২৫ দিন পর ধান পেকে গেলে কৃষক ধান কেটে নেয়। ধান কাটার সময় কৃষকেরা একটু উপরের থেকে তাদের ধান কাটলো, যাতে গমের চারাগুলো না কাটা পড়ে। গমের চারা জমিতে থেকে যায়। সঠিক সময়ে গম বীজ বোনার কারণে এবং এই সময়ে জমির লবণাক্ততা কম থাকার কারণে গম ফসল ভালো ফলন দিচ্ছে। মূলত এটিই বিনা চাষে রিলে গম উৎপাদন পদ্ধতির রহস্য।

ড. নিয়োগী বলেন, যেহেতু রিলে গম উৎপাদন পদ্ধতি একটি সহজ এবং অত্যন্ত কম ব্যয় সম্পন্ন একটি প্রযুক্তি, তাই কৃষক সহজেই এই পদ্ধতিতে গম চাষাবাদ করে একটি অতিরিক্ত ফসল তাদের লবণাক্ত পতিত জমিতে ফলাতে পারছে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছে। কৃষকরা বিঘাপ্রতি (৩৩ ডেসিমেল) সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ করে ৪০০ কেজি গম ঘরে তুলছেন, যার মূল্য ১০ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপকূলের কৃষকদের একটি মাত্র চাওয়া- লবণাক্ত পতিত জমিতে গভীর নলকূপ বসিয়ে সেচযোগ্য পানি নিশ্চিত করা। শুধুমাত্র সেচযোগ্য পানি নিশ্চিত করতে পারলেই উপকূলের হাজার হাজার হেক্টর পতিত কৃষি জমি ড. নিয়োগীর বিনাচাষে অত্যন্ত সহজ এবং কম ব্যয় সম্পন্ন রিলে পদ্ধতিতে গম উৎপাদনের প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসা যাবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , ,

oceantimesbd.com