ফুলগাজী বেদে পল্লীতে ৩০ পরিবারের নেই খাবার পানির কোন ব্যবস্থা

বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা ৩০ বেদে পরিবার ফুলগাজীর এই রেললাইনের উপর বসবাস করে আসছি। এই দীর্ঘ সময়ে অনেকে আমাদের দেখতে এসেছে তবে কেউ আমাদের সাহায্য করেনি। একটি টিউবয়েলের অভাবে আমরা বিশুদ্ধ পানি খেতে পারছি না। কখনো পুকুরের পানি, কখনো খালের পানি, আবার কখনো অনেক দূর থেকে চাপা কলের পানি আনতে হয়। এভাবেই বিশুদ্ধ পানির সংকটের কথা বলছিলেন, উপকূলীয় ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নে বসবাসরত বেদে পল্লীর হাছিনা আক্তার।

হাছিনা বলেন, আগে তাবিজ-কবজ বিক্রি করে, কখনো বা সাপের খেলা দুখিয়ে, সিঙ্গা দিয়ে, দাঁতের পোকা ফেলে উপার্জন করতাম। বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতির কারণে এখন এই ব্যবসাটা আর নেই৷ এখন আমরা খুবই কষ্টে দিন পার করছি।

২১ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেলে পরিত্যক্ত ফুলগাজী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন বেদে পল্লীতে গেলে নিজেদের এসব কষ্টের কথা তুলে ধরেন বেদে পল্লীর মানুষেরা।

এই বেদে পল্লী ঘুরে দেখা যায়, ৩০টি পরিবারের দুই শতাধিক সদস্যদের জন্য নেই বিশুদ্ধ পানির একটি নলকূপও। যার ফলে পুকুর ও খালের পানি খেয়ে পানিবাহিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন পল্লীর মানুষেরা৷ যা বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়তই। এছাড়াও এতোগুলো মানুষের জন্য রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি শৌচাগার। তাও আবার বেড়ার! বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যা ব্যবহার করা হয় না। এতে নেই পয়ঃনিষ্কাশনের সুবিধা, পানির ব্যবস্থাও তো নেই! বেড়া দিয়ে ঘেরা এর নাম ‘টয়লেট’।

শিক্ষা মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপদান। সে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এই বেদে পল্লীর শিশুরা। সচেতনতার নেই লেশমাত্র ছাপ। সব মিলিয়ে জীবন তাদের মানবেতর।

খালেদা বেগম নামে পল্লীর একজন নারী বলেন, আমরা সরকার থেকে চাল পাই না, ডাল পাই না। বর্তমানে আমরা খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছি। খাবার থাকলে খাই না হয় উপাস থাকি। উপজেলা চেয়ারম্যান সাব, টিএনও সাব, ওসি সাব কোনো দিনও আমাদের খোঁজ নেয়নি।

বেদে পল্লীর সরদার বয়োবৃদ্ধ আবু বক্কর বলেন, আমাদের বহু কিছু দিবের কথা বলে কিছুই দিলো না। এখন আর কিছু চাইওনা। শুধু একটা পানির কল দিলে আমরা ঠিকমতো পানি খেতে পারবো। আমি আপনাদের মাধ্যমে সকল বিত্তবানদের অনুরোধ জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন জানিয়ে কথা বলতে রাজি হননি উপজেলা প্রশাসেনের কোনো কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , , , , ,

oceantimesbd.com