পানিশূন্য তিস্তার চরে দুলছে কৃষকের সোনা ফলা স্বপ্ন

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে তিস্তা চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সমস্যাকে সম্ভাবনা করে তিস্তা চরে দুলছে পুষ্পের ফলানো স্বপ্ন।

এই উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের তিস্তা শৌলমারির চরে আছে অগনিত ছোট বড় চর আছে অগনিত ছোট বড় চর।শুষ্ক মৌসুমের মরা নদী তিস্তার ফসলের হাসি দেখা যায় যেখানকার কৃষকের মুখে।চরের জীবন, নদীর সাথে যুদ্ধ।কিন্তু সে যুদ্ধের বিজয়ের হাসিটা চরবাসিই হাসতে চায়।

এবার তিস্তার বালু চরে মিষ্টিকুমড়ার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। তিস্তার বালুচর এখন আর অভিশাপ নয়। বালুচরে মিষ্টিকুমড়া চাষ করে তিস্তাপারের হাজারো কৃষক এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

চরের হাসির মধ্যে আছে কৃষকের বেদনা।ভারতীয় ভেজাল বীজে ক্ষেত নষ্টের অভিযোগ।গড়ে উঠছে দালান কোঠা,কম্পানির আগ্রাসন।জমি চলে যাচ্ছে কর্পোরেটদের হাতে। তৈরি হয়েছে নদীর গতিপথ রোধ করে তিস্তার বুক চিরে রাস্তা। বসছে বাজার। দুষণ হচ্ছে নদীর পরিবেশ। চরে বসেছে বিদ্যুত প্লান্ট করেছে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়া গ্রুপ।

গতবার বন্যায় তিস্তাভাঙনে অনেক পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়ে। বালু পড়ে নষ্ট হয়ে যায় ফসলি জমি। তবে কৃষকেরা কঠোর পরিশ্রম করে চাষ করেন মিষ্টিকুমড়া, পিয়াঁজ, মরিচ, রসুন, ক্ষীরা সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। বালুচরে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে অনেকে সাফল্যের মুখ দেখছেন।

তিস্তার চরে মিষ্টিকুমড়ার চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের শৌলমারী এলাকার বাসিন্দা পরিমল চন্দ্র ও তার স্ত্রী রমনি বালা।

বাই সাইকেলে বস্তা বন্দী মিষ্টি কুমড়ো তুলছিলেন পরিমল চন্দ্র।৫ বছর থেকে চরে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছেন।৮টাকা ভার(দুই ডালি) লেবার খরচ দিয়ে বালুর মধ্যে মাটি ফেলেছেন।সেই মাটিতে লাগিয়েছেন মিষ্টি কুমড়ো।স্থানীয় বাজার প্রতিটি কুমড়ো ২০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তিনি বলছেন,মিষ্টি কুমড়া চাষে পুরোটাই লাভ।প্রতি বিঘায়(২৭ শতাংশ) ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেন।

সেকেন্দার আলী নামের আরেক জন কৃষক এখন যে কাউকে বিশ্বাস করতে নারাজ।তার ভাষ্যে বিশ্বাস এখন উঠে গেছে।দুইটা প্লোটে তিনি পেঁয়াজ বীজের বীজ উৎপাদনে পেঁয়াজ বুনেছিলেন। সেই পেঁয়াজের এখন শুধু ডাটা হয়েছে,পেঁয়াজ হয়নি।

তবে সঠিক বীজ পেলে ভাগ্য বদলে যায় কৃষকের। তার মতে,কি ভাবে শুষ্ক বালিতে ফসল ফলাতে হবে,তা চরের কৃষকরা জানেন।এক বিঘা জমিতে ধনে পাতার চাষ করে দের থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করেছেন তিনি।

এর পরেও আশারাগ কথা শোনালেন বেশ কিছু কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।কৃষকরা বলছেন,কৃষি অফিস থেকে বীজ,কীটনাশক,সার,পরামর্শে তারা রবি ফসলি চাষে বেশ খুশি।বালুতে কি করে ফসল চাষ করতে হবে,তার সব পরামর্শ পেয়ে থাকেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন,কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র,মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষকদের সার বীজ সহ সব রকম সহায়তা করে আসছেন।বিশেষ করে চরের কৃষকদের।প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ি এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা হচ্ছেনা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন,বীজ আমাদানীর ক্ষেত্রে আমাদের টেস্টিং উইং আছে।অবৈধ ভাবে বীজ আনার ফলের এসব বন্ধ করা যাচ্ছে না।চরের কৃষিতে আমাদের বাড়তি নজর আছে।প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতে, আমরা চরে কাজ করছি।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , ,

oceantimesbd.com