যে কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ফেনীর সোনাগাজী উপকূলীয় অঞ্চলে শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যার পর থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুরেও এ উপকুলের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি দেখা গেছে। দেখানো হচ্ছে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত।

বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জনসচেতনতা বাড়াতে চলছে মাইকিংসহ নানা প্রচার। প্রাণহানির হাত থেকে রক্ষায় উপকূলবাসীকে নেওয়া হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে তেমন একটা আগ্রহী নন মানুষ।

বিপদ সংকেত উড়ছে, চলছে সচেতনামূলক মাইকিং, সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে প্রশাসন সব ধরণের প্রস্তুতি নিলেও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এখনো খালি। ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়নে যেতে চাচ্ছে না স্থানীয়রা।

জীর্ণ-শীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে তেমন লাভ নেই বলেও জানান উপকূল এলাকার লোকজন। তাছাড়া সেখানে গিয়ে গাদাগাদি করে থাকতে হবে মনে করছেন তারা।

সোনাগাজী চর খোন্দকার এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন জলদাস বলেন, আরো কত ঘূর্ণিঝড় দেখেছি, এসবে আমরা ভয় পাই না। ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ণে ঘরে তো কিছু থাকবে না। সব লুট হয়ে যাবে।

পাড়ার আরেক বাসিন্দা হরমোহন জলদাস বলেন, এখানে নৌকা জাল, লাখ টাকার সম্পদ পড়ে আছে। এসব ছেড়ে তো অল্প কটা চিড়া মুড়ির জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যেতে পারি না।

পাড়ার নারী বাসিন্দা ফুলবি জলদাস বলেন, আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলোতে বসবাসের জন্য নারীদের জন্য ভাল ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তা নেই তাই ঘরেই ভাল। পানি না উঠা পর্যন্ত আমরা আছি।

ফায়ার সার্ভিস সোনাগাজীর টিম লিডার মফিজুর রহমান বলেন, মানুষকে সচেতন করতে আমরা তিনভাগে পৃথক হয়ে কাজ করছি। মোট ২৭ জন মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কাজ করে যাব আমরা।

এদিকে প্রশাসন বলছে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান, উপকূলে ৮নং বিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর ঝুঁকিপূর্ণ ৪টি ইউনিয়নের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ইতোমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৪৩টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র, মাঠে থাকবে ২ হাজার সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও স্কাউট সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।

উপকুলবর্তী এলাকার জেলে ও শ্রমজীবী মানুষগুলো বলছে ঝড়, প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে লড়াই করেই টিকে থাকেন। প্রশাসন তাদের ঘর-বাড়ি সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে তারা দূর্যোগে আশ্রয়কেন্দ্রমূখী হবে।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , ,

oceantimesbd.com