মনপুরায় বিদ্যুতের জন্য হাহাকার, দিনে পাঁচ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না

বিদ্যুৎ যেন গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলার গ্রাহকদের কাছে। দৈনিক আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা থাকলেও সেখান বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে মাত্র পাঁচ ঘণ্টার কম। আর এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা। তবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) কর্তৃপক্ষ।

ওজোপাডিকোর মনপুরা আবাসিক প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাজিরহাটে অবস্থিত ওজোপাডিকোর উপকেন্দ্র থেকে উপজেলা সদরের আশপাশের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার ৮৫০ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছেন তারা। এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে দুটি ৫০০ কেভি, একটি ৬৫০ কেভির মেশিন এবং এক মেগাওয়াটের একটি জেনারেটর। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরের দিকে ৬৫০ কেভির মেশিনটি নষ্ট হয়ে গেলেই আট ঘণ্টার পরিবর্তে দিনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়। পরে সেটি ঠিক হলেও আবারও ৫০০ কেভির একটি মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত সরবরাহের কথা থাকলেও বর্তমানে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা রিপন, রফিক, মেহেদী জানান, তারা মনপুরা হাজিরহাট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আগে প্রতিদিন আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেতেন। এখন সেখানে দীর্ঘদিন ধরে পাঁচ ঘণ্টারও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। তাও আবার ৪/৫ বার লোডশেডিং হয়ে থাকে। এজন্য তারা ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

গৃহিণী রুবিনা আক্তার জানান, বিদ্যুতের কারণে বর্তমানে তারা গরমের মধ্যে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না। এছাড়া ফ্রিজে কোনো কিছুই রাখতে পারেন না, সবই নষ্ট হয়ে যায়। এমনকী টিভিও দেখতে পারেন না ঠিকমতো।

স্কুলছাত্রী শারমিন জানায়, বর্তমানে বিদ্যুৎ কম থাকায় শিক্ষার্থীরা রাত জেগে পড়াশোনা করতে পারছে না। এজন্য তারা পরীক্ষায় ভালো ফলাফলও করতে পারছে না।

ব্যবসায়ী সোহাগ মাহমুদ সৈকত জানান, বিদ্যুতের সমস্যার কারণে তাদের ব্যবসা করতে অনেক বিঘ্ন ঘটে। এজন্য দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের দাবি করেন তিনি।

মনপুরা ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী আ. সালাম জানান, তাদের প্রতিদিন তেল বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ৬০০ লিটার। কিন্তু ৫০০ কেভি একটি মেশিন নষ্ট থাকার কারণে এক মেগাওয়াটের একটি জেনারেটর এবং একটি ৬৫০ কেভির মেশিন চালিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। যার কারণে বরাদ্দের চেয়ে অধিক তেল খরচ হওয়ায় তারা আপাতত সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিতে পারছেন। তবে সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , ,

oceantimesbd.com