তিমি শিকার: চরম হুমকিতে সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান

বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে তিমি বেশ সুপরিচিত। বিশেষ করে নীল তিমির গল্প ছোট বয়সে সকলেই শুনেছি। যদিও তিমিকে প্রায়ই মাছ বলা হয়, কিন্তু এরা আসলে মাছ না বরং স্তন্যপায়ী প্রাণী। অর্থাৎ বাচ্চা প্রসব করে থাকে। তাছাড়া এরা মাছের মত ফুলকার মাধ্যমে ফুলকার মাধ্যমে শ্বাস নেয়ার পরিবর্তে মানুষের মত ফুসফুসের মাধ্যমে শ্বাস নেয়।

এত বিশাল আকৃতির প্রাণীকেও মানুষ শিকার করেছে। বহু শতাব্দী ধরে মাংস, তেল ও অন্যান্য কাঁচামালের জন্য তিমি শিকার করা হয়। এই ব্যাপক নিধনের ফলে অনেক প্রজাতির তিমি বিপন্ন প্রায়।

বিশ্বজুড়ে তিমি শিকার নিষিদ্ধ হলেও আইসল্যান্ড, জাপান ও নরওয়ে এখনো তিমি শিকার করে। পনেরো শতকের দিকে তিমি শিকার শুরু হলেও ১৭০০-১৮০০ সালের দিকে আমেরিকায় অনেক বড় একটি তিমি নির্ভর শিল্প গড়ে উঠেছিল, ফলে ব্যাপক ভাবে তিমি শিকার শুরু হয়। যা সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পরতে শুরু করে। গবেষণায় দেখা গেছে শুধু এই শতাব্দীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ তিমি শিকার হয়েছে। ২০১৫ সালের এক সমিক্ষায় উঠে এসেছে পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশ নীল তিমি নিধন হয়ে গেছে।

এই ধ্বংসলীলা অনুধাবন করে ১৯৮৬ সালে “আন্তর্জাতিক তিমি শিকার কমিশন” গঠন করে ৮০ টি দেশ তিমি শিকার নিষিদ্ধে চুক্তি করে। এই কমিশনের সদস্য হয়েও গবেষণার দোহাই দিয়ে জাপান তিমি শিকার করতো। কিন্তু ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচারালয় গবেষণার জন্যেও তিমি শিকার নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এর পাঁচ বছর পরেই জাপান “আন্তর্জাতিক তিমি শিকার কমিশন”ও চুক্তি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে বাণিজ্যিক ভাবে তিমি শিকার শুরু করে।

যদিও মাংস, ও তেলের জন্যই প্রধানত তিমি শিকার করা হয়। কিন্তু পরিবেশগত তদন্ত সংস্থার (ইআইএ) এক গবেষণায় দেখা গেছে তিমির মাংসে ব্যাপক পরিমাণ মার্কারি বা পারদ থাকে যা স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারন।

যাই হোক অনেক প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা তিমি শিকার বন্ধে কাজ করে যাচ্ছেন। হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের (এইচএসআই) নির্বাহী পরিচালক রুড টমব্রক বলেন, “তিমিদের রক্ষা করা প্রাকৃতিক ভাবে অতিপ্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ। নয়তো এই বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর সাথে পুরো সমুদ্রের পুরো বাস্তুসংস্থান হুমকিতে পড়বে”

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: ,

oceantimesbd.com