ভূমিকম্প পাল্টে দিল ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ, সম্ভবত নিরাপদ বাংলাদেশ: ড. বিশ্বজিৎ নাথ

ছবি: উইন্ডি ডট কমের দেওয়া ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস

ছবি: উইন্ডি ডট কমের দেওয়া ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে একটি লঘুচাপ। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আগামী ১৩ মে নাগাদ আঘাত হানার কথা ছিল বাংলাদেশের উপকূলে। বিশেষভাবে ধারণা করা হয়েছিল এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মিয়ানমারের উপকূলের যে কোনো স্থানে আঘাত হানবে। যেখানেই আঘাত হানুক না কেন এর প্রভাবে দুই দেশের উপকূলেই ব্যপক ধংসযজ্ঞ ঘটতে পারে বলেও শঙ্কা ছিল।

তবে গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) ভোরে বঙ্গোপসাগরে ৪ দশমিক ৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। এই ভূমিকম্পের প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকা’র গতি পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া ও দুর্যোগ গবেষকরা। আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট উইন্ডি ডটকমও বলছে, এই ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের দিকে মোড় নিতে যাচ্ছে। তবে এটি যাওয়ার পথে ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপ ও বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আঘাত করে যেতে পারে বলেও জানাচ্ছে সংস্থাটি।

ছবি: স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ

ছবি: স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ

শুক্রবার (৫ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ গবেষক ড. বিশ্বজিৎ নাথ বলেন, আমাদের শঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করে ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। স্যাটেলাইট ডাটা পর্যালোচনা করে প্রথমদিকে আমরা দেখেছিলাম এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে চট্টগ্রাম উপকূলের দিকে এগিয়ে আসবে। তবে বৃহস্পতিবার ভোরে বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্প হওয়ার পর থেকে ঘূর্ণিঝড়টির ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এটি এখন আন্দামান থেকে দক্ষিণপূর্বদিকে এগিয়ে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের দিকে মোড় নিচ্ছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে এটি ইয়াঙ্গুন উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এর কিছু প্রভাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে মোকা আগামী ১২ মে রাত ১২টা নাগাদ মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন উপকূলে আঘাত হানবে। আঘাতের সময় এটি বেশ শক্তিশালী হবে। সম্ভাব্য বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটারের বেশি। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পাওয়ার পর প্রথম আঘাত করবে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপে তারপর মিয়ানমারের দিকে আগাবে। প্রথম ধাক্কায় কিছুটা দুর্বল হলেও ইয়াঙ্গুনের উপকূলে আঘাতের আগে আবারও শক্তিশালী হয়ে উঠবে মোকা। কারণ এই মুহূর্তে সমুদ্রের ওই অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রয়েছে। সেটি ঝড়ের শক্তি বাড়াতে সহায়ক হবে।

পূর্ণিমার সময় এই ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হওয়ায় এর সঙ্গে জোয়ারের উচ্চতাও বাড়তে পারে। আঘাতের সময় ইয়াঙ্গুন উপকূলে ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলেও জানান তিনি।

ঘূর্ণিঝড় মোকা বাংলাদেশে আঘাত না হানলেও এর প্রাভাবে সাগর উত্তাল থাকবে। কক্সবাজার উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় জোয়ার হতে পারে। তবে সেন্টমার্টিন ও এর নিকটবর্তী সাগর উত্তাল থাকবে তাই জেলেদের সাবাধানে রাখা প্রয়োজন বলেও জানান দুর্যোগ গবেষক ড. বিশ্বজিৎ নাথ।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , , ,

oceantimesbd.com