উন্নত দেশের স্বপ্নে বাধা হবে শব্দ দূষণ

পরিছন্ন রাজশাহী শহরের শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ ব্যাটারীচালিত যানবাহন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন থেকে ১০ হাজার ব্যাটারী চালিত যানবাহনের অনুমোদন থাকলেও বাস্তবে ৩ গুণ বেশী চলাচল করছে।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব বিষয় তুলে ধরেন বক্তারা। পরিবেশ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধী এই প্রকল্পে জরিপ ও মতবিনিময় সভার কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগীতায় আছে ইকিউএমএস কনসালটিং লিমিটেড এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ণ কেন্দ্র (ক্যাপস)।

উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ এনডিসি, সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) এ.এন.এম মঈনুল ইসালাম এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন স্টামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

সভায় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্পের মাঠ সমন্বয়ক ইঞ্জিঃ মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী। এছাড়াও সরকারী বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি, ডাক্তার, বাসমালিক সমিতির সদস্য, সাংবাদিক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, সামাজিক ও পরিবেশবাদি বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ বলেন, রাজশাহী একটি পরিছন্ন শহর, বর্তমানে কিছু উন্নয়নমূলক কাজ ও অধিক ব্যাটারীচালিত যানবাহনের কারনে শব্দ দূষণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন থেকে ১০ হাজার ব্যাটারী চালিত যানবাহনের অনুমোদন থাকলেও বাস্তবে ৩ গুণ বেশী চলাচল করছে। মাত্রতিরিক্ত শব্দ উৎপন্নকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমান ও শাস্তি প্রদানের জন্য তিনি পুলিশ বিভাগ, বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সিটি কর্পোরেশনে সমন্বয় করতে কাজ করার নির্দেশনা দেন।

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) এ. এন. এম মঈনুল ইসালাম বলেন, দীর্ঘমেয়াদী শব্দ দূষণের ফলে একটি বধির জাতির দিকে আমারা এগিয়ে যাচ্ছি। সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলকভাবেই রাজশাহীতে শব্দ দূষণ রুখতে হবে নচেৎ উন্নত দেশের স্বপ্নে বাধা হবে শব্দ দূষণ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি এবং পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. শিতাংশু কুমার পাল বলেন পরিবেশ রক্ষায় অধিদপ্তরের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসাথে কাজ করতে পারে। প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজ গুলোর বিভিন্ন বিভাগকে পরিবেশ অধিদপ্তর বিভিন্ন গবেষণার কাজে লাগাতে পারে। এভাবে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক কাজের মাধ্যমে স্থানীয় সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা যেতে পারে।

স্টামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, শব্দ দূষণ সহ পরিবেশ দূষণ রোধে আমাদের দেশে পর্যাপ্ত আইন রয়েছে, তবে আইনের প্রয়োগ হোক সর্বেশেষ পদক্ষেপ এবং সচেতনতাই হোক সর্বপ্রথম পদক্ষেপ।

প্রকল্পের পরামর্শক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রনে এবং সচেতনাতা বৃদ্ধিতে পরিবেশ অধিদপ্তর আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, এজন্য জনগণের সহযোগীতা একান্ত কাম্য।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

oceantimesbd.com