ওশানটাইমস ডেস্ক : ৯ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১৩:০৬:৪৬
মহাসাগরে অতল গহবরে লুকিয়ে আছে বিস্ময়কর সব রহস্য। আজকের আয়োজনে সাজানো হয়েছে মহাসাগরের বিস্ময়কর কিছু রহস্য নিয়ে।
যদিও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরা সমুদ্রবিজ্ঞানে অনেকদূর এগিয়েছি। তবুও এখনও অনেক বিষয় রয়েছে যার রহস্যের পর্দা আজও উন্মোচিত হয়নি।
সমুদ্রের তল কোথায় আছে: ভূপৃষ্ঠের ৭০ শতাংশ যেহেতু সমুদ্রের অন্তর্গত। তাই ভূপৃষ্ঠের ৭০ শতাংশ পৃষ্ঠ সমুদ্রের নিচে অবস্থিত। এবং এই পৃষ্ঠের অনেকটাই মানুষের চোখের বাইরে রয়ে গেছে। ইতিমধ্যে আমরা যদিও সৌরজগতের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের গবেষনা চালিয়েছি। তবে সেই তুলনায় সমুদ্রের বিষয় নিয়ে গবেষণার পরিমাণ অনেক কম। আমরা সমুদ্রের বিভিন্ন স্থানের গভীরতা মাপতে সক্ষম হলেও সেখানে এখনো পৌঁছাতে পারিনি। তাই এখনও আমাদের কাছে সমুদ্রের তল অজানাই রয়ে গেছে। সমুদ্রের তল আমাদের কাছে বিস্ময়কর একটি রহস্য।
বেগুনি রংয়ের অরব: ওসিয়ান এক্সপ্লোরেশন ট্রাস্টের গবেষকরা ২০১৬ সালে সমুদ্রের নিচে একটি গবেষণা কার্যকরী চালনা করছিলেন। তাদের এক্সপ্লোরেশন জাহাজের নাম ছিল নটিলাস। তারা নটিলাসে করে ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্র তলদেশ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। হঠাৎ তাদের চোখ একটি বেগুনি রঙের অরব দিকে আটকে যায়। তারা অবাক বিস্ময় এই বেগুনি রঙের বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকেন। প্রাথমিক অবস্থায় তারা এটিকে মাকড়সার ডিমের থোলি বা ক্ষুদ্র আকৃতির অক্টোপাস বলে নিজেরা নিজেদের মধ্যে তামাশা করেন। পরবর্তীতে তারা এর একটি নমুনা সংগ্রহ করেন। তারা এখনও নিশ্চিত নয় এই জীবটি কিসের প্রজাতি। এই জীব নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখনো রয়ে গেছে রহস্য।
বাল্টিক সাগরে এলিয়েনের স্পেসশিপ: আমরা তো মহাকাশে অনেক জায়গায় এলিয়েনদের খুঁজলাম। পাওয়া গেল না। তবে কি সমুদ্রের তলায় তারা তাদের ঘাটি করতে পারে? ২০১১ সালে সমুদ্র অনুসন্ধানকারী দের একটি দল বাল্টিক সাগরের নিচে অদ্ভুত চিহ্নযুক্ত ডিম্বাকৃতির একটি বস্তু খুঁজে পায়।পরবর্তীতে এই বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায়। অনেকই এটিকে এলিয়েনদের স্পেসশিপ বলে ধারণা করেন। বিজ্ঞানীরা অবশ্য তাদের সাথে একমত নয়। তাদের ধারণা এই অদ্ভুত গঠনটি মূলত হিমবাহ দ্বারা সৃষ্টি। অথবা খেয়ালী প্রকৃতি আপন-মনে সাজিয়েছে সাগরের তলদেশকে। তবে এটি আসলে কি? এবং কি থেকে সৃষ্টি এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্য।
বিশালাকৃতির স্কুইড: আপনি কি পাইরেটস অফ দ্য ক্যারাবিয়ান দেখেছেন? তাহলে নিশ্চয়ই সমুদ্রের দানব ক্রাকেন সম্পর্কে জানেন। অথবা আপনি যদি জুল ভার্নের লেখা ২০০০ লীগ আন্ডার দা সি পড়ে থাকেন তাহলেও বিশালাকৃতির এই দানব সম্পর্কে আপনার ধারণা রয়েছে। বেশ কয়েকটি সমুদ্রে ডুবে যাওয়া জাহাজের বেঁচে যাওয়া নাবিকেরা বলেছেন যে বিশালাকৃতির স্কুইড তাদের জাহাজ আক্রমণ করে ডুবিয়ে দিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা এ তথ্য মানতে নারাজ। তবে গভীর সমুদ্রের অনেক প্রাণী সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে বিজ্ঞানীরা জায়ান্ট স্কুইডের ছবি তুলতে সক্ষম হন। তবে এরা গভীর সমুদ্রের প্রাণী হওয়ায় এদের জীবনযাপন প্রণালী সম্পর্কে জানা যায়নি। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে এরা আকৃতিতে প্রায় ৬৬-৭০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এটিও একটি রহস্যময় প্রাণী।
সর্ব বৃহত্তম জলপ্রপাত: আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক বৃহৎ জলপ্রপাত এর নাম কি? কি উত্তর দিবেন আপনি? নিশ্চয়ই আপনার মনে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের কথা মাথায় আসবে। তবে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে গভীর সমুদ্রের তলদেশে একটি বিশাল জলপ্রপাত রয়েছে। যা পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম জলপ্রপাত এর চেয়েও প্রায় ৪ গুন বড়। চিন্তা করা যায় বিশাল জলপ্রপাত রয়েছে সমুদ্রের তলে। তবে বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যের বিষয় হলো সমুদ্রের তলে কিভাবে জলপ্রপাতের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এর উত্তর তারা আজও জানতে পারেননি।
সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।
Tags: মহাসাগর
For add