চিংড়ি কেন মাছ নয়?

অ্যাকুরিয়াম এ মাছ রাখা হয় উক্ত জায়গার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য। চিংড়ি মাছ নিয়ে ইতোপূর্বে একটি আর্টিকেল লেখা হয়েছে তবে আরও অনেক বিষয়বস্তু আছে যা গত আর্টিকেলে উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। এদের অ্যাকুরিয়ামে রাখা যাবে কি? এই কারনে আজকে উক্ত আর্টিকেলে দ্বিতীয় অংশ লেখা হচ্ছে। যাই হোক চিংড়ি মাছ ছাড়াও ইছা মাছ নামের এক ধরনের মাছের সাথে আমরা বেশ পরিচিত এবং প্রায়ই খেয়ে থাকি। এটি বিভিন্ন উপায়ে রান্না করে খাওয়া যায়। তো অন্যান্য আরও দেশি বিদেশি চিংড়ি মাছ সম্পর্কে জানা যাক।

চিংড়ি কেন মাছ নয়?

চিংড়ি মাছ প্রকৃত অর্থে মাছ নয়। বরং এরা আর্থপোডা পর্বের প্রানী। এই কারনে এদের সম্পূর্ন মাছ হিসেবে বলা যায় না। তবে আমরা যেহেতু সচরাচর এই মাছ মাঝেমধ্যে খেয়ে থাকি তেমনি লোক মুখে এটি মাছ হিসেবেই সবাই জানে। বরং এটিকে কেউ যদি মাছ না বলে তবে সাধারন লোকের যুক্তির খাতায় নাম লিখাতেও হতে পারে। আমাদের দেশে চিংড়ির অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে গলদা চিংড়ি এবং বাগদা চিংড়ি উল্লেখযোগ্য এবং সবাই কম বেশি খেতে পছন্দ করে।

এরা সামুদ্রিক অঞ্চলে বেশী হয় এবং সমুদ্রের উপকূলে যাদের দেখা মিলে তারা আকারে যেমন বড় তেমনি সুস্বাদু প্রকৃতির হয়। পৃথিবীর স্থলভাগের চেয়ে জলভাগের পরিমান বেশী হওয়ার কারনে সমুদ্রের নিচে জীব বৈচিত্র্য বেশি দেখা মিলে এবং নিত্য নতুন সামুদ্রিক মাছ কিংবা সামুদ্রিক প্রানীর দেখা মিলে। এমন সুন্দর উজ্বল সামুদ্রিক চিংড়ী মাছ সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

কার্ডিনাল চিংড়িঃ

এই প্রজাতির চিংড়ির উৎপত্তি ইন্দোনেশিয়ার সুলায়েশি হ্রদে। এই প্রজাতির চিংড়ি মাছ লাল রঙের হয়ে থাকে এবং এদের গায়ে সাদা ফোটা ফোটা দাগ থাকে। এই কারনে এদের দেখতে অনেক আকর্ষনীয় লাগে। শুধুমাত্র এদের আকর্ষনীয় লুকের জন্য হয়ে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। এদের আপনি অ্যাকুরিয়ামে রাখতে পারবেন তবে উপযুক্ত ভাবে যত্ন নিতে হবে। এরা শাকাসী প্রজাতির এবং শৈবাল খেয়ে থাকে।

সাদা-কালো চিংড়িঃ

এরা সাদা কালো রঙের হওয়ার পরও অনেক ছোট আকারের। এদের দেখতে মনে পান্ডার মত। এমন মনে লাগার কারন এদের শরীরের রং। এদের অনেকেই পান্ডা চিংড়ি বলে থাকে। তৃনভোজী হওয়ার কারনে এরা পুষ্টিকর খাবার খেয়ে থাকে। এরাও কার্ডিনাল চিংড়ির অন্তর্ভুক্ত।

অ্যাকুরিয়াম এর চিংড়িঃ

অ্যাকুরিয়াম ব্যবহারের দিক থেকে আপনি যদি নতুন হন তাহলে এই চিংড়ি মাছ উত্তম হতে পারে। কারন দেখতে সবুজ অথবা টিয়া কালারের হয়ে থাকে। এদের দেখতে অনেক সুন্দর লাগে এবং আকারে ছোট হওয়ার কারনে যেখানে সেখানে রাখে যায়। ছোট অ্যাকুরিয়ামের পাত্রে এদের রাখতে হয়। এরা শৈবাল খেয়ে থাকে এবং আপনি যদি একে একুরিয়ামে রাখতে চান তাহলে খাবার দেওয়া ছাড়া নির্দিষ্ট সময় পর পর শুধু ট্যাংক পরিষ্কার করলেই হবে।

কাঁচের চিংড়িঃ

এই প্রজাতির চিংড়ি সম্পূর্ন সাদা প্রকৃতির হওয়ার কারনে দেখতে সাদা দেখায়। সাদ বলতে এখানে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার বুঝানো হয়েছে। তবে অনেকেই এই চিংড়িকে ভূতুরে চিংড়ি মাছও বলা হয়ে থাকে। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারনে এরা নিজেদের শিকারীর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে এবং এরা অবশ্যই একত্রে গ্রুপে চলাফেরা করে অথবা একাই চলাফেরা করে থাকে। ক্রিস্টাল ক্লিয়ার হওয়ার কারনে এরা অ্যাকুরিয়ামের ট্যাংক বেশি পরিষ্কার করতে হয় না।

ব্লু বোল্ট চিংড়িঃ

এটি অন্যান্য চিংড়ির চেয়ে আকারে বড় এবং এদের অন্য নাম তাইওয়ানের মৌমাছি বলা হয়। এদের চায়নার দক্ষিনাংশে দেখতে পাওয়া যায়। তবে এদের লোকাল মার্কেটে আর পাওয়া যায় না। এদের রঙ ব্লু কালারের হওয়াই অ্যাকুরিয়ামে এদের রাখলে সুন্দর লাগে। এদের রঙ অনেকটাই ক্রিমি নীল ধরনের হয়ে থাকে। অ্যাকুরিয়ামের মধ্যে নীল রঙের চিংড়ি এবং সবুজ কালারের ছোট লতা জাতীয় গাছ সম্পূর্ন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

পরিশেষে, উপরের চিংড়ি সবগুলোই অ্যাকুরিয়াম এ রাখা যাবে। অনেকেই চিন্তা করে যে চিংড়ি মাছ কে অ্যাকুরিয়ামে রাখা যাবে কি না? রাখা গেলেও কোন ধরনের চিংড়ীর রাখা যাবে তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। এই আর্টিকেল পড়ার পর আশাকরি অনেকের বিভিন্ন কনফিউশন দূর হবে। লেখাটি পড়ে কেমন লাগল তা কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন এবং লেখাটি আপনার টাইমলাইনে শেয়ার করুন। ততক্ষন পর্যন্ত ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , ,

oceantimesbd.com