জোয়ার-ভাটা কেন হয়?

 

নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশে ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৪০৫ টির মত নদী রয়েছে৷ একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এক এলাকার নদীর জল হঠাৎ বেড়ে গেছে তো অন্য এলাকার নদীর জল হঠাৎ কমতে শুরু করেছে৷ মূলত, পৃথিবীর উপর চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণের কারণে নদী ও সমুদ্রের জল হঠাৎ ফুলে উঠে আবার হঠাৎ নামতে শুরু করে।

প্রধানত চাঁদের আকর্ষণের কারণে নদী বা সমুদ্রের পানি ফুলে ওঠাকে জোয়ার বলা হয়। আবার দেখা যায়, জোয়ারের সময় নদী বা সমুদ্রের পানি যে জায়গায় ফুলে যাচ্ছে তার সমকোণে অবস্থিত স্থান থেকে পানি নামতে শুরু করেছে৷ চাঁদের সমকোণ স্থানে পানি নেমে যাওয়াকে বলা হয় ভাটা৷

চাঁদের আকর্ষণের ফলে পৃথিবীর যেই অংশ চাঁদের মুখোমুখি ও বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকে সেই সব জায়গায় জোয়ার হয়। আর চাঁদের সাথে সমকোণে অবস্থান করা অংশের পানি নেমে যায়, অর্থাৎ ভাটা সংগঠিত হয়।

আমরা সকলে জানি যে, পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে নিজ অক্ষ পথে একটি নির্দিষ্ট গতিতে অবিরাম ঘুরে চলেছে। পৃথিবীর এই আবর্তন গতির ফলে এক ধরনের শক্তি উৎপন্ন হয় যা কেন্দ্রবিমুখী ও কেন্দ্র বহির্মুখী শক্তি হিসেবে পরিচিত।

বর্হিমুখী শক্তি সমুদ্রের জলকে প্রভাবিত করলে এই বহির্মুখী শক্তির প্রভাবে সমুদ্রের জল বাইরের দিকে বেরিয়ে যেতে চায়। চাঁদের আকর্ষণের কারণে সমুদ্রের যেখানে জোয়ার হয় তার ঠিক বিপরীত দিকে চাঁদের আকর্ষণ এর তুলনায় কেন্দ্রবিমুখ বলের প্রভাব বেশি হয় ফলে সমুদ্রের ওই স্থানেও জোয়ার হয়।

আর সমুদ্রের পরস্পর বিপরীত যে দুটি স্থানে জোয়ার হয় তার সমকোণে অবস্থিত দুটি স্থানে জল নেমে গিয়ে তখন ভাটা হয়।

জোয়ার ভাটার সময়ের ব্যবধান:

আমরা জানি পৃথিবীর গতি দুই ধরণের। একটি আহ্নিক গতি, অপরটি বার্ষিক গতি। অর্থাৎ, বার্ষিক গতির কারণে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে যেমন ঘরে, ঠিক তেমনি আহ্নিক গতির কারণে নিজ মেরুরেখায় একটি নির্দিষ্ট গতিতে একবার ঘুরতে ২৩ ঘন্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড সময় নেয়। যার ফলে দিন-রাত হয়। আহ্নিক গতির ফলে পৃথিবীর প্রত্যেকটি দ্রাঘিমা একবার করে চাঁদের সরাসরি সামনে আসে। ফলাফল স্বরূপ, ২৪ ঘন্টায় একই জায়গায় ২ বার জোয়ার এবং ২ বার ভাটা হয়।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags:

সব সংবাদ

For add

oceantimesbd.com