সাতক্ষীরা'র শ্যামনগর

বিশ্ব জলবায়ু অবরোধে উপকূলের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি

বিশ্ব জলবায়ু অবরোধ ২০২৩ এ উপকূলের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবী করেছে শ্যামনগর উপজেলার সকল শ্রেণীর মানুষ। শুক্রবার (৩ মার্চ ২০২৩ ) সকাল ১০ টায় শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স-এর সহযোগিতায় শ্যামনগর উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম ও শ্যামনগর উপজেলা যুব ফোরামের আয়োজনে বিশ্ব জলবায়ু অবরোধ কর্মসূচি-২০২৩ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ এই দাবি তুলে ধরেন।

জলবায়ু অবরোধ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন শ্যামনগর উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নজরুল ইসলাম, প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন।

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আয়ূব ডলি, জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সম্পাদক, সাংবাদিক ও শিক্ষক রনজিৎ বর্মন, ফোরামের সদস্য ও সহকারী অধ্যাপক মানবেন্দ্র দেবনাথ, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্জ জি এম আকবর কবীর, সাংবাদিক আবু সাঈদ, সাংবাদিক মারুফ হোসেন মিলন, অ্যাকশন এইডের উপজেলা ম্যানেজার লস্কর হোসেন ও উপজেলা যুব ফোরামের সভাপতি মোমিনুর রহমান প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব উপকূলীয় অঞ্চল তথা সারাবিশ্বের উন্নয়নের সকল পদক্ষেপকে প্রভাবিত করছে। উন্নত দেশগুলি গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন করে জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে। বাংলাদেশ কোন ভূমিকা না রেখেও বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চল আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করা ও ক্লাইমেট জাস্টিস প্রতিষ্ঠার জন্য সুইডেনের স্কুল ছাত্রী প্রতিবাদী শিশু অগ্নিকন্যা গ্রেটা থানবার্গ-এর ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার, সারাবিশ্বের সাধারণ জনগণ, যুব ও স্কুল ছাত্ররা জনসমাবেশ, র‌্যালি, মানববন্ধন ও পথসভা করছে।’

জলবায়ু অবরোধে বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা উপকূলে বাস করি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আজ যদি আমরা সচেতন না হই এবং আমরা আমাদের ক্ষয়ক্ষতি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপদের মধ্যে পড়বো। এ জন্য সকলকে এই আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করার আহবান জানাচ্ছি।’

জলবায়ু অবরোধ কর্মসূচিতে বক্তারা বেশ কিছু দাবি তুলেন। সেগুলো হলো-

১. সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলাকে জলবায়ু ঝুঁকিপুর্ণ বা দুর্যোগ ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা ঘোষণা করতে হবে,
২. দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বাজেটে বিশেষ বরাদ্ধ দিতে হবে,
৩. উপকুলীয় এলাকায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে একটি বাড়ি একটি শেল্টার কার্যক্রম শুরু করতে হবে,

৪. জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ করতে হবে,
৫. উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে,
৬. উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে,
৭. দ্রুততার সাথে ভঙ্গুর স্লুইসগেটগুলো মেরামত করতে হবে,

৮. জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে,
৯. ঝড়-ঝঞ্ঝা, নদীভাঙ্গন ও ভূমিক্ষয় ঠেকাতে উপকূল, দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ এবং প্যারাবন বা সবুজ বেষ্টনি গড়ে তুলতে হবে,
১০. উপকূলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে,
১১. উপকূলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

উল্লেখ্য, লিডার্স এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে ও খুলনা জেলার কয়রাতে এই জলবায়ু অবরোধ কর্মসূচি-২০২৩ উদযাপন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , , ,

oceantimesbd.com