মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় সুপার ডাইক বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু

কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়া উপকূলের মাতারবাড়ি, ধলঘাটা ও কুতুবদিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সুপার ডাইক বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (০৩ মার্চ) বেলা ১১টায় ব্যায়াম ফাউন্ডেশনের কনফারেন্স হলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড আয়োজিত কুতুবদিয়া ও মাতারবাড়িতে সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন শীর্ষক এক মত বিনিমিয় সভা ও কর্মশালায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বৃন্দ।

উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখেন আশেক উল্লাহ রফিক এমপি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, শুরুতে মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় সুপার ডাইক বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প-এর প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে উত্থাপন করা হলেও এখন কুতুবদিয়ায়ও নির্মিত হবে সুপার ডাইক বেড়িবাঁধ। ৭০ নং পোল্ডার বান্দরবান জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হলেও কাজের সুবিধার্থে এখন কক্সবাজার জেলায় অধীনে নেওয়া হয়েছে। মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় সুপার ডাইক বেড়িবাঁধের জন্য ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করালেও এখন তা সংশোধন হয়ে আরো বাড়বে প্রস্তাবে।

কর্মকর্তারা আরো জানান, মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় ১৭.৬৩ কিঃমিঃ সুপার ডাইকের উচ্চতা হবে ১০ মিটার। এতে ৮.৫ কিলোমিটার হবে নতুন বাঁধ। এই পোল্ডারে খাল খনন হবে ১০.১২ কিলোমিটার। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য ৩ একর লেক খনন ও বনায়ন করা। কুতুবদিয়া উপজেলায় ৪০.১৮ কিঃমিঃ সুপার ডাইক বেড়িবাঁধ নির্মিত হবে। প্রথম পর্যায়ে বাঁধের উচ্চতা হবে ৮.৫ মিটার।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য পুকুর পুনর্বাসন ও বনায়ন করা। সম্প্রতি একাধিক মেগা প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের কারণে ভরাট হয়ে যাওয়া কুহেলিয়া নদী খনন করা হলে নদীর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে। সুপার ডাইকের উপরে হবে আধুনিক সড়ক। এই প্রকল্প বাস্তায়ন হলে ধলঘাটার পশ্চিমে হাসের চরের ৩২৫ একর জমি সুপার ডাইকের ভিতরে চলে আসবে। ফলে মহেশখালীর ভূমি বৃদ্ধি পাবে ৩২৫ একর।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য ঝুকিপুর্ণ ৮ ইউনিয়নের জনগণকে শতভাগ সুরক্ষা দিতে কাজ করছে সরকার। এলাকার উন্নয়ন ও মানুষকে শতভাগ সুরক্ষা দেওয়াই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল লক্ষ্য।

এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মহেশখালী ও কুতুবদিয়া হবে সুরক্ষতি ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ উপজেলা। আশাকরি অচিরেই এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরো বলেন ৯১ সালের প্রলয়ংকরি ঘূর্ণিঝড়ে এই দুই উপজেলায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া উপহাস করে বলেছিলেন যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা তত মানুষ মরেনি। বিরোধী দলের নেতা হয়েও সর্বপ্রথম শেখ হাসিনাই অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছিলেন।

বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডঃ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা পরিকল্পনা করেন তা বাস্তবায়নও করেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীবাসীর আরো একটি স্বপ্ন পূরণ হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় বিশেষ অতিথি’র আরো বক্তব্য রাখেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক ভুঞা, প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) শ্যামল চন্দ্র দাস।’

বক্তব্য রাখেন, ‘মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোহাম্মদ ইয়াছিন, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙজেব মাতবর, ধলঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, মাতারবাড়ির ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আবু হায়দার, বড়ঘোপের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিকদার, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ কাইয়ুম চৌধুরী, দক্ষিণ ধুরুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আল আজাদ, লেইমশী খালীর চেয়ারম্যান আকতার হোসন।’

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , , ,

oceantimesbd.com