২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীর গভীর সমুদ্রে কী পরিবর্তন আসছে

পৃথিবীর সামুদ্রিক জীবনকে রক্ষা করতে অবশেষে ঐক্যবদ্ধ হল রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশগুলি। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সদর দফতরে এ নিয়ে বিশেষ সমাবেশ বসেছিল। সমুদ্ররক্ষার শর্তে সদস্য দেশগুলি সম্মত হলে এই সমাবেশের সভাপতি ঘোষণা করলেন-জাহাজ তীরে পৌঁছেছে! তাঁর কথায় হাততালিতে ফেটে পড়ে সভাকক্ষ। অনেক অপেক্ষা, সুদীর্ঘ আলোচনা, বছরের পর বছর ধরে সমঝোতা-তার পরে এল এই দিনটি।

প্রায় দেড় দশক ধরে আলোচনা চলছে। তবে এতদিন পরে জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হল। গত ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই চুক্তির বিষয়েই এবার সমস্ত সদস্য একমত হয়েছে। ঠিক হয়েছে-২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর স্থল ও জলের ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে।

প্রকৃতি বিষয়ক এক সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে–পরিবেশ সংরক্ষণের দিক থেকে এটি ঐতিহাসিক দিন। সব রকমের টানাপড়েন কাটিয়ে অবশেষে এ বিশ্ব মানুষ ও প্রকৃতিকে রক্ষায় একজোট হয়েছে। খুবই বড় একটা সিদ্ধান্ত এটি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি এটি।

এই চুক্তিপত্রটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করা ও তা লাগু করার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। কিছু আইনি দিকও রয়েছে।

রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস এ বিষয়ে জানান, ধ্বংসের মুখে সমুদ্র। পৃথিবীর জলভাগকে রক্ষায় যে চেষ্টা করা হচ্ছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, তা সত্যিই অনেক বড়।

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সমুদ্র উপকূল থেকে ৩৭০ কিলোমিটার পেরোলে শুরু হয় ‘হাই সি’ বা গভীর সমুদ্র। পৃথিবীর সামুদ্রিক অঞ্চলের ৬০ শতাংশই গভীর সমুদ্র। গভীর সমুদ্র ও তার পরিবেশ নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের তেমন কোনও মাথাব্যথা থাকে না বলেই। তবে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, মাছ ধরার বাড়াবাড়ি, এই সব কিছুর জেরে সমুদ্র-অঞ্চল কিন্তু বহুদিন ধরেই বিপর্যস্ত।

যদিও এই ‘হাই সি’ বা গভীর সমুদ্রই হল এ গ্রহের ফুসফুস। মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অর্ধেকই তৈরি হয় সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে। কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয় সমুদ্র। এখনও পর্যন্ত গভীর সমুদ্রের মাত্র ১ শতাংশ সুরক্ষিত রয়েছে। নতুন এই চুক্তি কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য সুরক্ষিত অঞ্চল তৈরি করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , ,

oceantimesbd.com