ওশানটাইমস ডেস্ক : ১৪ নভেম্বর ২০২২, সোমবার, ১৪:০৪:৪২
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে প্রায়ই শুকিয়ে যায় পাহাড়ের বিভিন্ন জনপদের পানির উৎস ছড়া বা কূপগুলো। তখন চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় সেখানকার মানুষদের। এ সময় পানি সংগ্রহ করতে মাইলের পর মাইল পাহাড়ি পথে ছুটতে হতো সেখানকার নারীদের। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে পুরস্কার জিতে নিলো রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ।
গত শনিবার মিসরের শার্ম আল-শেখ অবকাশ যাপন কেন্দ্রে বিশ্ববাসীকে জানানো হয় বাংলাদেশের দূর্গম পাহাড়ের ৫ গ্রামের ওই নারীদের গল্প। অনুষ্ঠানে ১৭০টি দেশের মধ্যে জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্পে সফলতার জন্য ‘লোকাল অ্যাডাপটেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জুরাছড়ির সোলার প্যানেলের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প। দেওয়া হয় ১৫ হাজার পাউন্ড আর্থিক সহায়তা। তাদের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এবং রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের প্রতিনিধি অরুনেন্দু ত্রিপুরা।
জলবায়ু অভিযোজনে অবদানের জন্য প্রতি বছর জলবায়ু সম্মেলনে এই পুরস্কার দেয় জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এর নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান গ্লোাবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ)। রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের পাশাপাশি এই পুরস্কার অর্জন করে ভারতের পুনের বেসরকারি সংগঠন স্বয়াম শিক্ষণ প্রয়োগ, নেপালের বেসরকারি সংগঠন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ফোরাম এবং কেনিয়ার সংগঠন অ্যাডাপটেশন কনসোর্শিয়াম।
এর আগে রাঙ্গামাটির দূর্গম পাহাড়ের মানুষের পানির সংকট সমাধানে ২০২০ সালে প্রকল্পটির উদ্যোগ নেয় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি ও ডেনমার্ক উন্নয়ন করপোরেশন-ডানিডা। প্রকল্পটি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
রাঙ্গামাটি স্থানীয় জলবায়ু সহনশীল কমিটির পক্ষে প্রকল্প সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন সুমন্ত চাকমা। তিনি বলেন, আগে অনেক দূরে গিয়ে ছড়া বা কূপ থেকে পানি সংগ্রহ করতে হতো ওই এলাকার মানুষদের। মাঝে মাঝে সেটি শুকিয়ে গেলে চরম বিপর্যয় নেমে আসতো সেখানে। পরে জেলার দুর্গম ৮ টি উপজেলায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সফলতার জন্য পুরস্কার অর্জন করে জুরাছড়ি উপজেলার নারীদের উদ্যোগে নেওয়া এই পদক্ষেপ।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, এওয়ার্ড অর্জনের চেয়েও সমস্যার সমাধান করতে পারা আমাদের জন্য বড় অর্জন। এই অ্যাওয়ার্ডের প্রাপ্য সেখানকার নারীরা। কারণ তারাই কষ্ট সয়ে বিষয়টি তুলে এনেছে, সমাধানের পথ দেখিয়েছে। একইসঙ্গে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই উন্নয়ন সহযোগিদের। তারা অর্থ সহায়তা দিয়েছিল বলেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।
Tags: অ্যাওয়ার্ড, ইউএনডিপি, কপ২৭, জলবায়ু সহনশীল কমিটি, ডানিডা, লোকাল অ্যাডাপটেশন চ্যাম্পিয়নস
For add