মহেশখালীতে ৩০০ একর প্যারাবনভূমি উদ্ধার, ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ

* টানা ৪ দিন অভিযান
* ফাঁকা ৫০ রাউন্ড গুলি
* উচ্ছেদ অভিযানে শতাধিক বনকর্মী
* থানায় ৩ টি ও বন আইনে ১৬ মামলা, আসামি ৮০ জন
* উদ্ধার ৩০০ একর বনভূমি

মহেশখালীতে আওয়ামী লীগ -বিএনপি একট্টা হয়ে গত কয়েকমাস ধরে হোয়ানকের পানিরছড়ার পশ্চিমে বেক্সিমকোর ঘোনার লাগলো ও কালাগাজী পাড়ার বগাচতর ঘোনার লাগোয়া অবৈধভাবে সরকারি প্যারাবন কেটে জবরদখল করা সেই বনভূমি দখল মুক্ত করতে গত ২৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ টানা ৪ দিন অভিযান চালিয়েছে বন বিভাগ। এসময় ভূমিদস্যুরা জড়ো হলে প্রায় ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে বনকর্মীরা । পরে স্কেভেটার ও খনন যন্ত্র দিয়ে বাঁধ কেটে প্রায় তিন শত একরের অধিক প্যারাবনের ভূমি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আয়ুব আলী। তিনি আরও জানান চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ও সহকারী বন কর্মকর্তা শেখ আবুল কালাম আজাদ নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ০৮ জন রেঞ্জ কর্মকর্তা ও শতাধিক রাইফেলধারী ফরেস্ট গার্ড উচ্ছেদ অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন।

সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জের আওতাধীন কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার অমাবশ্যাখালী মৌজায় স্থানীয় ভূমিদস্যু চক্র এরশাদ গং, শাহাবুদ্দিন গং ও সিকদার গং কয়েকদিন ধরে প্যারাবন এর বৃক্ষ নিধন করে স্ক্যাবেটর দিয়ে মাটি কেটে প্যারা বনের ক্ষতি সাধন করে প্রায় ৩০০ একর চিংড়ির ঘের ও লবণ মাঠ তৈরি করে আসছিল।

এনিয়ে বন বিভাগ ও মহেশখালী থানা পুলিশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে নামে মাত্র উদ্ধার ও মামলা দিলেও পরে তা আবারও দখল করে নেন ভূমিদস্যুরা। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও বন মন্ত্রাণালয়ে লিখিত অভিযোগ হলে এনিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বন বিভাগ। ফলে টানা ৪ দিন অভিযান চালিয়ে সরকারি প্যারবনের প্রায় ৩০০ একরের অধিক জায়গা দখল মুক্ত করে বন বিভাগ। এসব উদ্ধারকৃত প্যারা বন উপকূলবাসীকে ঘুর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত হয়েছিল। ভূমিদস্যুরা এসব প্যারাবনের প্রায় ২০ হাজার বাইন গাছ কেটে প্রায় বন বিভাগের ২ কোটি টাকা ক্ষতিসাধন করেন।

পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের নেতা হোবাইব সজীব বলেন- সম্প্রীতি সময়ে হোয়ানকে প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের তৈরী করে বন উঝাড় করে পরিবেশ ধ্বংস করলেও নামে মাত্র অভিযান ও মামলা দিয়ে ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রক্ষা করতে পারছে না বনভূমি। উঝাড় হওয়া বনে পুনরায় বাগান সৃজন করে উপকূলকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।

এবিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দু রহমান বলেন, হোয়ানকে জবরদখল অপচেষ্টার সাথে এরশাদ গং, শাহাবুদ্দিন গং ও সিকদার গং জড়িত। এই পর্যন্ত বন বিভাগ ৮০ জন ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় ০৩ টি ও বন আদালতে ১৬ টি মামলা দায়ের করেছে। উদ্ধারকৃত বনভূমিতে পুনরায় প্যারাবন সৃজন করা হবে বলেও নিশ্চিত করেন।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , , ,

oceantimesbd.com