একজন ধনীব্যক্তি সাধারণ মানুষের চেয়ে ১ মিলিয়ন গুণ বেশি কার্বন ছাড়ে: গবেষণা

ক্রমেই বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। যার বিরূপ প্রভাব সহ্য করছে পুরো বিশ্ব। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো তুলনামূলক নিচু ও অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করছে। ঝড়, বন্যা ও খড়াসহ নানান দুর্যোগ প্রতিনিয়ত ভাসিয়ে নিচ্ছে এসব দেশের মানুষের স্বাপ্ন। এই পরিস্থিতির জন্য অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ দায়ী সেই আলোচনা চলছে যুগের পর যুগ ধরে। তবে দূষণের জন্য বরাবরই ধনী দেশগুলোকে দায়ী করা হলেও দূষণকারী ব্যক্তিদের নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। এবার কেনিয়াভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের এক গবেষণায় তুলে আনা হয়েছে ধনীদের কার্বণ নিঃসরণের চিত্র।

গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে ১২৫ জনের বিনিয়োগের কারণে বছরে গড়ে ৩০ লাখ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয়। যা একজন সাধারণ মানুষের গড় কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণের থেকে প্রায় ১ মিলিয়ন গুণ বেশি। বিশ্বজুড়ে ১৮৩টি সংস্থায় এই ব্যক্তিদের ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন অংশীদারিত্ব রয়েছে বলেও জানানো হয়।

অক্সফামের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি ও সিমেন্টের মতো দূষিত শিল্পে বিশ্বের সব থেকে ধনী ব্যক্তিদের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে। বলা হয়, ১২৫ জন ধনী ব্যক্তির বিনিয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা থেকে ৩৯৩ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। যা ফ্রান্সের বার্ষিক কার্বন ডাই অক্সাইডের বিনিয়োগের সমান।

এই ধনী ব্যক্তিরা তাঁদের প্রাইভেট জেট বিমানে ১৬ মিলিয়নবার ভ্রমণ করেছেন। প্রতি একজন ধনী ব্যক্তির বিনিয়োগ থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের প্রভাবে ৮০ লাখ মানুষকে পড়তে হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে অক্সফামের ভারতীয় অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ বেহার বলেন, বিশ্বের সামগ্রিক কার্বন ডাই-অক্সাইড বেশিরভাগটাই ধনী ব্যক্তির মাধ্যমে নিঃসরণ হয়। যার প্রভাব ভয়াবহভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটায়। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বার বার আলোচনা হলেও, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের প্রভাব নিয়ে সেভাবে আলোচনা হয়নি। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিরা যদি সিমেন্ট বা জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ না কমান তাহলে সমস্ত পদক্ষেপ অর্থহীন হয়ে যাবে।

অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের জলবায়ু পরিবর্তন প্রধান নাফকোটে ডাবি বলেন, ধনী বিনিয়োগকারীদের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের হার অত্যন্ত দ্রুত হচ্ছে। ধনী ব্যক্তিরা মুনাফা অর্জন করছে। আর জলবায়ু পরিবর্তনের হার দ্রুত বাড়ছে। মানুষ ক্রমেই বিপদের মুখে পড়ছে। কার্বন নির্গম নিয়ন্ত্রণের জন্য বিনিয়োগকারীদের ওপর বিধিনিষেধ জারি করতে হবে।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: ,

oceantimesbd.com