৩ লাখ টাকায় সেন্টমার্টিনের ৫ টন প্লাস্টিক কিনে নিলো বিদ্যানন্দ

প্লাস্টিক বর্জ্যের ভাগারে পরিণত দেশের সবচেয়ে প্রতিবেশসমৃদ্ধ এলাকা সেন্টমার্টিন দ্বীপ। পর্যটনের সম্ভাবনায় ভরা এই দ্বীপের প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প পরিচালনা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। কিন্তু বিন্দামাত্রও পরিবর্তন আসেনি দ্বীপটির। লোক দেখানো কিছু কাজ হলেও কমেনি একটি প্লাস্টিকও। তবে এবার ভিন্নরকম আয়োজনের মাধ্যমে দ্বীপটি থেকে প্রায় ৫টন প্লাস্টিক কুড়িয়ে এনেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

গত সপ্তাহজুড়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল দেওয়ার মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে সংস্থাটি। সেন্টমার্টিন থেকে সংগৃহীত প্লাস্টিক দুইটি ট্রলারে করে কক্সবাজারে নিয়ে এসেছে তারা। প্লাস্টিকগুলো দিয়ে কক্সবাজারের সৈকতে তৈরি করা হচ্ছে একটি প্লাস্টিক দানব। এর মাধ্যমে মানুষকে প্লাস্টিকবিরোধী সচেতনতার বার্তা দিতে চায় সংস্থাটি।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সালমান খান ওশানটাইমসকে বলেন, আমরা সেন্টমার্টিনে প্লাস্টিকের বিনিময়ে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। এই কর্মসূচিতে খুব অল্প সময়ে দ্বীপের বেশিরভাগ প্লাস্টিক তুলে আনা সম্ভব হয়েছে। আমরা অনুমান করছি গত ৩-৪ দিনে অন্তত ৫টন প্লাস্টিক বর্জ্য উদ্ধার হয়েছে।

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বড় সমস্যা এটি মূল ভূখন্ড থেকে আলাদা। সেখান থেকে কোনো জিনিস কক্সবাজারে নিয়ে আসাও ব্যয় সাপেক্ষ। তবে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিতে চেয়েছি। আমরা স্থানীয়দের ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার উপহার দিয়ে প্লাস্টিকগুলো সংগ্রহ করেছি। তারপর দুটি ট্রলারে করে সেগুলো কক্সবাজারে নিয়ে এসেছি।

কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিক দিয়ে দানব বানাচ্ছে বিদ্যানন্দ

‘কক্সবাজার সৈতকে এই প্লাস্টিকগুলো দিয়ে একটি দানব তেরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা মানুষকে জানাতে চাই যে, অবচেতনমনে তাদের ফেলা প্লাস্টিকগুলো আমাদের জন্য দানবে রূপ পাচ্ছে। এই দানবটি প্রদর্শন শেষে আমরা একটি রিসাইকেল প্রতিষ্ঠানকে প্লাস্টিকগুলো দিয়ে দিবো যেন সেগুলো পুনরায় ব্যবহার করা হয়।’ বলছিলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা।

প্লাস্টিকের দানব তৈরির মূল পরিকল্পনাকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী আবির কর্মকার। তিনি বলেন, প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করতে এরই মধ্যে ২০ বস্তা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে, যা কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ৭ দিন ধরে দিনরাত কাজ করে এ দানব তৈরি করছি। এর উচ্চতা ৩৮ ফুট ও প্রস্থ ১৪ ফুট। আমি, শুভ্র বাড়ৈ, নির্জর, সাব্বির, বিদ্যানন্দের ৮ জন স্বেচ্ছাসেবক ও ৪ জন কাঠমিস্ত্রি নিয়ে এই প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করছি। মূলত মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এ দানব তৈরি করা হয়েছে।

প্লাস্টিক দানবটি আজ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , ,

oceantimesbd.com