রকিয়ত উল্লাহ, মহেশখালী : ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার, ৫:৪৩:৩৫
হোয়ানকে প্যারাবন নিধনে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নাম বাদ দিয়ে গত ২১ জানুয়ারি একটি ফরমায়েশী মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ। মামলার করার কারণে উচ্ছেদ অভিযানে গড়িমসি শুরু করে কর্তৃপক্ষ। অবশেষে গণমাধ্যমের চাপের মুখে ২৭ জানুয়ারি হোয়ানকের পানির ছড়ার পশ্চিমে অমাবশ্যা খালীর বেক্সিমকো ঘোনার লাগোয়া প্যারাবন দখলমুক্ত করতে এক নাটকীয় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে বন বিভাগ।
এতে কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে কয়েকটি স্থানে নামে মাত্র চিংড়ি ঘেরের বাঁধ কেটে ফটোসেশন করে গণমাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযানের সংবাদ প্রচার করে বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ।
পরদিনই কয়েকশ শ্রমিক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে ফের সেই ঘের দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা- এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা জানান, বন বিভাগ,পুলিশ, সাংবাদিক কয়েকবার এখানে এসে ঘুরে গেলেও প্যারাবন নিধনকারীদের কাছ থেকে সরকারি কয়েকশ একর জায়গা দখল মুক্ত করতে পারেনি। ফলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে পাশ্ববর্তী আরও কয়েকটি জেগে উঠা চর দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান।
অথচ বন বিভাগ, মহেশখালী থানার ওসি ও সাংবাদিকের একটি টিম ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শনে সরাসরি প্যারাবনের মাটি কেটে চিংড়ি ঘের করার কাজে ব্যবহৃত একটি স্কেভেটরসহ হাজার হাজার বাইন গাছ কাটার দৃশ্য দেখতে পায় এবং তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি লাইভ টেলিকাস্টের মাধ্যমে দেখানো হয়।
পরে গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিট কর্মকর্তা মাহবুবুর আলম বাদী হয়ে ৪ জন ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে ১৪৫০টি বাইন গাছ কেটে বন বিভাগের প্রায় ২২ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে মামলা দায়ের করেন। অথচ এই মামলার প্রধান আসামি ভূমিদস্যু শাহাব উদ্দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উক্ত স্থানে কোন প্যারাবন ছিল না বলে হাস্যকর দাবি জানান।
এদিকে ভূমিদস্যু চক্রের অন্যতম সদস্য শাহাব উদ্দিনের এমন প্রতিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সচেতন মহল। তারা জানান, আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতার নির্দেশে প্যারাবন নিধন করে সরকারি জায়গা দখল করে উপকূল ধ্বংসের উৎসবে মেতে ওঠেন শাহাব উদ্দিন গংরা। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ শাহাব উদ্দিন গংদের আইনের আওতায় না আনলে সরকারি সম্পদ ও উপকূল রক্ষা করা যাবে না বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগ বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান- আসলে বন বিভাগে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে এবং মামলাও করা হয়েছে। আবারও দখল নেওয়ার চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্যারাবন উচ্ছেদ নিয়ে, মহেশখালী উপজেলা বাপার সভাপতি মোসাদ্দেক ফারুকী বলেন, ‘উপকূলের রক্ষা কবজ প্যারাবন নিধনকারীরা দেশের শত্রু উপকূলের শত্রু। তারা পরিবেশ নিধন করে বারবার পার পাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তারা প্যারাবন নিধন থামেনি। তাদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি উক্ত স্থানে পুনরায় প্যারাবন সৃজন করতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহাব উদ্দিন জানান, জমিগুলো মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরীসহ আমাদের পৈতৃক জমি। ওই জায়গায় কোনো প্যারাবন ছিল না।
For add