ভরা মৌসুমেও পর্যটক নেই সুন্দরবনে

পর্যটনের ভরা মৌসুমেও পশ্চিম সুন্দরবনে প্রত্যাশিত পর্যটক যাচ্ছে না। এজন্য বন বিভাগের অতিরিক্ত ভ্রমণ কর নির্ধারণ ও জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন ট্যুর অপারেটররা। সুন্দরবনে পর্যটক কমায় এই খাতের সাথে জড়িতরা বেকার সময় পার করছেন। এতে ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও ট্রলার মালিকরা বড় অংকের লোকসানের মুখে পড়ছে। কমেছে বন বিভাগের রাজস্ব আদায়।

পদ্মা সেতু চালুর পর মাওয়া ঘাটে যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় সেখানকার একটি লঞ্চ ট্যুরিস্ট সার্ভিস দেয়ার জন্য সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে আনা হয়েছে। তবে গেল দুই মাসে ট্রিপ হয়েছে মাত্র একটি। অথচ লঞ্চটির প্রতি মাসের রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মী খরচ প্রায় লাখ টাকা। একই অবস্থা এখানকার ছোট বড় ট্রলার ও অন্য ট্যুরিস্ট সার্ভিসের।

লঞ্চের কর্মীরা বলেন, আমাদের যে খরচ, সেটাও উঠছে না। প্রতি মাসেই লোকসান গুণতে হচ্ছে।

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ভ্রমণের এখন ভরা মৌসুম। করোনা মহামারির আগেও এই সময় প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকতো এখানকার পর্যটন স্পটগুলো। তবে এ বছর ভরা মৌসুমেও পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে আসছেন না প্রত্যাশিত পর্যটকরা।

ট্যুর অপারেটররা বলছেন, পর্যটকদের জন্য বন বিভাগের অতিরিক্ত হারে ভ্রমণ কর নির্ধারণ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ভ্রমণ খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে সুন্দরবন দেখার আগ্রহ হারিয়েছেন পর্যটকরা।

পর্যটকরা বলেন, আগের চেয়ে ভ্রমণের খরচ বেড়েছে। আগে যে ভাড়া ছিলো এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

সাতক্ষীরা রেঞ্জ হয়ে সুন্দরবন দেখতে আসা লোকজন কলাগাছিয়া, দোবেকি, মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, দুবলার চর এবং হিরণপয়েন্ট এলাকা ভ্রমণ করে থাকেন। এর মধ্যে কলাগাছিয়ায় ভ্রমণে গিয়ে একদিনের মধ্যেই ফিরে আসা যায়। এছাড়া অন্য চারটি স্থানে ভ্রমণ করতে হলে আগে ভাগে অনুমতি নিতে হয় বন বিভাগের। তবে এসব জায়গায় ঘুরার জন্য পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো, আবাসিক ব্যবস্থা ও খাবার হোটেল না থাকায় পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হয়।

পর্যটকরা বলছেন এখানকার পরিবেশ আরও উন্নত করতে হবে। নিরাপদ পানির সংকট বেশি বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কলাগাছিয়াসহ পশ্চিম সুন্দরবনের ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে চলছে অবকাঠামো নির্মাণ। আর শীত কমলে আবারো বাড়বে পর্যটকের সংখ্যা।

সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের বাইরে একজন পর্যটকের প্রতিদিনের রাজস্ব ছিল ৭০ টাকা, যা এখন করা হয়েছে ১৫০ টাকা। আর অভয়ারণ্য এলাকায় ১৫০ টাকায় জায়গায় বর্তমানে গুণতে হয় ৩০০ টাকা। এছাড়া বিদেশি পর্যটককে প্রতিদিনের জন্য দিতে হবে ৩ হাজার টাকা। পাশাপাশি লঞ্চ ও ট্রলারসহ সব ধরনের নৌ-যানের ভাড়া বেড়েছে দুই থেকে তিনগুণ।

সূত্র: এখন টিভি

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

oceantimesbd.com